অনির্বাচিত সরকার দিয়ে পাঁচ বছরেও সংস্কার সম্ভব না: সাজেদুল হক
বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কারে সময় এবং ধৈর্যের প্রয়োজন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ডা. সাজেদুল হক রুবেল। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের পথ কখনোই সরল হবে না; বরং নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগোতে হবে। নির্বাচনের জন্য যেমন রাজনৈতিক সংস্কার প্রয়োজন, তেমনি প্রকৃত সংস্কারকেও এগিয়ে নিতে প্রয়োজন একটি শক্তিশালী নির্বাচিত সরকার।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত টক-শো তে এসব কথা বলেন তিনি।
সাজেদুল হক বলেন, ‘একটা ভয়ংকর ব্যক্তিকেন্দ্রিক স্বৈরাচারী ব্যবস্থাকে ভেঙে বাংলাদেশ যাত্রা শুরু করেছিল গত বছরের আগস্ট অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে। একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে। এবং এই পথ পরিক্রমা যে সরলভাবে হবে তা কিন্তু নয়। এটা অনেকটা সর্পিলাকারে অগ্রসর হবে। এটা আমাদের মেনে নিতে হবে। আমরা যদি মনে করতে থাকি তিন মাস বা চার মাসে এটা কেন হলো না? সেক্ষেত্রে একটা হতাশা ছড়াবে। ফলে জনগণ নিজেদের আস্থার জায়গাটা হারাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেই রাজনৈতিক দলগুলো এই দেশকে এতকাল শাসন করেছে, তাদের যে রাজনৈতিক দর্শন, সেই দর্শনের মধ্যে রাষ্ট্র ব্যবস্থার পরিবর্তন মূল কথা নয়। তারা শুধুমাত্র লড়াই করে শাসক পরিবর্তন করার জন্য। যখন বিএনপি ক্ষমতায় আসে তখন বিএনপি'র রেজিমকে পাল্টিয়ে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসতে হবে। আবার যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে তখন তাদের পাল্টিয়ে জাতীয় পার্টিকে আসতে হবে।’
‘আমাদের মনে রাখতে হবে, নির্বাচনের জন্যই সংস্কার করতে হবে, আবার যদি আপনি একটা অবাধ, সুস্থ, নিরপেক্ষ নির্বাচন চান, যদি জনগণের প্রকৃত মনোভাবের প্রতিফলন চান, এবং জনগণের জন্য একটা সরকার তৈরি করতে চান, তাহলে আমাদের এখনকার ব্যবস্থার সংস্কার করে একটা সুস্থ নির্বাচন করতে হবে। আবার সংস্কারকেও অগ্রসর করার জন্য একটা নির্বাচিত সরকার দরকার।’
ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে এই সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে সামগ্রিক পরিবর্তন সম্ভব কিনা জানতে চাইলে সাজেদুল হক বলেন, ‘সামগ্রিক পরিবর্তন কখনই ডিসেম্বরের মধ্যে সম্ভব নয়। কিন্তু একটা ধারাবাহিক পরিবর্তনের শক্তিশালী আরম্ভ সম্ভব এই ডিসেম্বরের মধ্যে। বাংলাদেশে বর্তমানে অনেক সমস্যা। যা ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু হয়ে গত পনেরো বছরে আরও প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে এত সমস্যার প্যাঁচ যদি ছুটাতে হয় তাহলে একটি অনির্বাচিত সরকার ৫ বছরেও তা করতে পারবে না। এখানে সংস্কার করা সম্ভব হবে না।’